গমের ছাতু বানানোর নিয়ম - ছাতু খাওয়ার নিয়ম
আপনি কি জানেন গমের ছাতু বানানোর নিয়ম ও ছাতু খাওয়ার নিয়ম? বন্ধুরা আজকে আমরা আলোচনা করব গমের ছাতু বানানোর নিয়ম ও ছাতু খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে। আপনি যদি গমের ছাতু বানানোর নিয়ম সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আর্টিকেলটি পড়তে থাকুন।
পোস্ট সুচিপত্র ঃ গমের ছাতু বানানোর নিয়ম - ছাতু খাওয়ার নিয়ম
- ছাতু খাওয়ার অপকারিতা
- ছাতু খাওয়ার উপকারিতা
- গর্ভাবস্থায় ছাতু খাওয়ার উপকারিতা
- গমের ছাতু বানানোর নিয়ম
- ছাতু খাওয়ার নিয়ম
- ছাতু খেলে কি ওজন কমে
ছাতু খাওয়ার অপকারিতা
গমের ছাতু আমাদের অনেক প্রিয় এবং প্রাচীন পরিচিত খাবার। এটি সাধারণত বিভিন্ন খাদ্যশস্য দিয়ে বানানো হয় যেমন চাল, গম, ভুট্টা ইত্যাদি। অনেকেই ছাতু খাওয়ার অপকারিতা জানিনা বা জানার চেষ্টা করি না। চলুন এবারে আমরা জেনে নেই ছাতু খাওয়ার অপকারিতা। পূর্বে গ্রামাঞ্চলের মানুষের প্রিয় খাবার ছিল ছাতু। প্রিয় খাবার হলে কি হবে এর রয়েছে অনেক উপকারিতা।
আরো পড়ুন গর্ভবতী মায়ের ফল খাবার তালিকা - গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া উচিত
যেমন কথায় আছে অতিরিক্ত কোন কিছু ভাল না। আপনি হয়তো জানেন আসলে অতিরিক্ত কোন কিছু ভালো না। যত ভিটামিনযুক্ত খাবারই হোক না কেন আপনি যদি অতিরিক্ত পরিমাণ গ্রহণ করে থাকেন সেটা অবশ্যই স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হবেই। তেমনি ছাতুও এর ব্যতিক্রম কিছু নয়। অতিরিক্ত ছাতু খেলে আপনার পেটের সমস্যা সহ আরো নানাবিধ সমস্যা ভুগবেন।
ছাতু খাওয়ার উপকারিতা
ছাতু খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আপনি কি জানেন? আপনি যদি না জেনে থাকেন তাহলে চলুন জেনে নিই ছাতু খাওয়ার উপকারিতা। এটা আমাদের সকলের যেমন প্রিয় একটি খাবার তেমনি ছাতুতে রয়েছে নানা পুষ্টি উপাদান। যেমন খনিজ, ভিটামিন, উপকারী ফ্যাট, ফাইবার ইত্যাদি।
- ছাতু খাওয়ার সাথে সাথে উপকারী উপাদান গুলি রক্তে মিশে যায় যার ফলে তৎক্ষণাৎ শরীরে এনার্জির মাত্রা বাড়তে শুরু করে।
- ছাতুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। যার ফলে প্রতিদিন ছাতুর শরবত নিয়মিত খেলে কনস্টিপেশন এর মত সমস্যা থেকে বাঁচা যায়। সেই সাথে হজম শক্তি প্রচুর পরিমাণে বৃদ্ধি পায়।
- মেয়েদের পিরিয়ডের সময় শরীরে পুষ্টির ঘাটতি দেখা দেয়। এই ঘাটতি পূরণের জন্য ছাতুর শরবত এর কোন বিকল্প নেই। ছাতু তে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে খনিজ এবং ভিটামিন যা শরীরের সচলতা বজায় রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
- ছাতুতে রয়েছে প্রোটিন এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট। যা চুল এবং ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে এক কথায় ত্বক এবং চুলের জেল্লা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে।
- আমরা জানি বয়স বাড়তে থাকলে শরীরে নানা সমস্যা বাসা বাধে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, ৬০ বছরের পর যদি নিয়মিত ছাতু খায় তাহলে একাধিক বয়সকালীন রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। এর ফলে শেষ বয়সটা নিশ্চিন্তেই কাটার সম্ভাবনা থাকে।
- বাচ্চাদের জন্য এই খাবারটি খুব ভালো। বাচ্চারা বাজারে যেসব ড্রিংক খায় সেগুলোর পরিবর্তে আপনি যদি নিয়মিত ছাতু বানানো শরবত দিতে পারেন সেটি হবে সবচেয়ে বেস্ট। কারণ ছাতুতে রয়েছে ক্যালসিয়াম, ফাইবার, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম যা শিশুদের দাঁত এবং হাড়ের গঠনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। তাই বাইরের কোন খাবার না দিয়ে বাচ্চাদের ছাতুর তৈরি শরবত খাওয়ান।
- ছাতু ওজন কমাতে ভালো সাহায্য করে। যেমন আপনি যদি ছাতুর তৈরি শরবত এবং সাথে লেবুর রস যুক্ত করে খান তাহলে আপনার ক্ষুধা কম লাগবে। যেটা আপনাকে ওজন কমাতে সাহায্য করবে।
- ছাতুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যেটা আপনার পাকস্থলী এবং অন্ত্রের জন্য অনেক উপকারী। ছাতু হজম শক্তিকে বৃদ্ধি করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
- ব্লাড প্রেসারে আক্রান্ত রোগীদের জন্য ছাতু খুবই উপকারী একটি খাবার। এর জন্য ছাতুর মধ্যে জিরা, লেবু এবং পানি মিশিয়ে খেতে হবে।
গর্ভাবস্থায় ছাতু খাওয়ার উপকারিতা
যেহেতু নানা ধরনের পুষ্টি গুনাগুন সমৃদ্ধ শস্যদানা থেকে ছাতু তৈরি করা হয় সেহেতু গর্ভাবস্থায় ছাতু খাওয়া অনেক উপকার। চলুন গর্ভাবস্থায় ছাতু খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিই। ছাতুতে রয়েছে ভিটামিন এবং ফাইবার এছাড়াও থাকে প্রোটিন।
এর জন্য আপনি বেছে নিতে পারেন গম, ভুট্টা এবং যবের ছাতু। যেটাতে আপনি এই ভিটামিন গুলো পেয়ে যাবেন। তবে ভিটামিন গুলো গর্ভাবস্থায় বাচ্চার হাড়, দাঁত গঠনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়েরা ছাতু খেতে পারবেন সেটা অবশ্যই পরিণত পরিমাণে। খেয়াল রাখবেন যেন অতিরিক্ত খাওয়া না হয়। এতে আপনার ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
গমের ছাতু বানানোর নিয়ম
শুধু গম নয়, জব, চালভাজা , ভুট্টা ইত্যাদিরও ছাতু বানানো যায়। গমের ছাতু বানানোর নিয়ম একেবারেই সোজা। আপনি কিছুটা পরিশ্রম করলেই বাড়িতে বসেই গমের ছাতু বানাতে পারবেন। গমের ছাতু বানাতে প্রয়োজন গম। এই একটা উপকরণের সাহায্যে আপনি বানিয়ে নিতে পারবেন স্বাস্থ্যকর বাসায় বানানো গমের ছাতু।
আরো পড়ুন রোজা রেখে রমজান মাসে ওজন কমানোর ০৭ উপায়
প্রথমে আপনাকে গম ভালোভাবে পরিষ্কার বা ধুয়ে নিতে হবে। ধুয়ে নেওয়ার গমকে ভালো করে শুকিয়ে নিতে হবে। গম ভালোভাবে শুকানোর পর সেটাকে ঝেড়ে পরিষ্কার করে মাটির খোলায় ভাজতে হবে ভালো করে। গম ভাজার পর সেটা যাঁতা অথবা মেশিন কলে ভাঙাতে হবে। ব্যাস তৈরি হয়ে গেল আপনার গমের ছাতু। যদি যাঁতা বা মেশিন কলে ভাঙ্গানোর ব্যবস্থা না থাকে তাহলে আপনি ইচ্ছা করলে শীল পাটায় বেটে ছাতু বানাতে পারেন। একটা কথা বলে রাখি মেশিন কলে ভাঙানো ছাতুর চেয়ে যাঁতায় পেশা ছাতু সুস্বাদু বেশি হয়ে থাকে।
ছাতু খাওয়ার নিয়ম
অল্প কয়েকটা উপকরণ মিশিয়ে আমরা সুস্বাদু ছাতু তৈরি করতে পারি। আপনি যদি সঠিক ছাতু খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে না জেনে থাকেন তাহলে জেনে নিন ছাতু খাওয়ার নিয়ম। আপনার যদি ডায়াবেটিস এর সমস্যা না থাকে তাহলে আপনি দুধ, চিনি, কলা বা পানি দিয়ে মিশিয়ে ছাতু বানাতে পারেন।
এছাড়াও দুধ চিনি ছাতু মিশিয়ে সর্বদা নিয়েও খেতে পারবেন এতে শরীর ঠান্ডা থাকে। যদি আপনি ওজন কমাতে চান তাহলে ছাতুর সাথে লেবুর রস নিতে পারেন। আবার যদি চান শুধু পানি আর ছাতু নিয়েও খেতে পারবেন। নরমালি গ্রামের মানুষ চিনি, পানি, ছাতু, দুধ মিশিয়ে ছাতু খেয়ে থাকে। এছাড়াও এই ছাতুর সাথে চাইলে আপনি পাকা আম বা কলা ইচ্ছামত যোগ করতে পারেন।
ছাতু খেলে কি ওজন কমে
আমরা অনেকেই জানতে চাই ছাতু খেলে কি ওজন কমে? হ্যাঁ বন্ধুরা একাধিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে ছাতু খেলে শরীরের অনেক উপকার হয়, সেই সাথে ছাতু খেলে অনেকক্ষণ পেট ভরে থাকে যার জন্য বেশি খাওয়া পড়ে না। অর্থাৎ বারবার খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়। যার জন্য আপনার ওজন কম হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। অর্থাৎ ছাতু ওজন কমাতেও বেশ সাহায্য করে থাকে।
আরো পড়ুন জাম খাওয়ার ১০ টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত
প্রিয় পাঠক আশা করছি আমাদের আজকের এই গমের ছাতু বানানোর নিয়ম ও ছাতু খাওয়ার নিয়ম আর্টিকেলটি আপনাদের অনেক ভালো লেগেছে। ছাতু খাওয়ার নিয়ম আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। আর্টিকেলটিতে গমের ছাতু সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আর্টিকেলটি থেকে যদি আপনি কিছু শিখতে পারেন তাহলেই কেবল আমাদের কষ্ট সার্থক হবে। আজকের মত বিদায় নিচ্ছি সবাই ভালো থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ। ২৩২৬১